গর্ভপাত-এর আগে প্রথমে সুনিশ্চিত হতে হবে যে মহিলাটির গর্ভপাত করানোর প্রয়োজন আছে কি না। যদি থাকে তা হলে আন্দাজ করতে হবে যে গর্ভবস্থা কত দিন হয়েছে এবং গর্ভধারণ গর্ভাশয়েই হয়েছে কি না। সঠিক ভাবে করা হলে কৃত্রিম গর্ভপাতের ঝুঁকি সামান্যই। কিন্তু গর্ভাবস্থা যত বেশি দিনের হবে, ঝুঁকি তত বেড়ে যাবে (গ্রিমস অ্যান্ড কাস্টস ১৯৭৯)। অতএব গর্ভপাতের সবচেয়ে সঠিক পদ্ধতি বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার সময়কাল চিহ্নিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ কর্মচারী থাকা উচিত, যাঁরা মহিলাটির আনুপূর্বিক বিবরণ নেবেন ও দ্বিহাস্তিক শ্রোণি পরীক্ষা (বাই ম্যানুয়াল পেলভিক একজামিনেশন) করবেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে কৃত্রিম গর্ভপাত করানোর মতো কর্মচারী বা যন্ত্রপাতি না থাকলে মহিলাটিকে অবিলম্বে নিকটবর্তী হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা থাকতে হবে। মহিলাটিকে সঠিক উপায় বেছে নেওয়ার ব্যাপারে পরামর্শ দেবার মতো দক্ষতা থাকতে হবে৷
শারীরিক পরীক্ষার সময় স্বাস্থ্যকর্মীকে দেখে নিতে হবে জরায়ু সামনের দিকে (অ্যান্টিভার্টেড) অথবা পেছনের দিকে (রিট্রোভার্টেড) ঝুলে আছে কি না অথবা অন্য কোনও অবস্থায় আছে কিনা। এ ছাড়াও দেখে নেওয়া উচিত কোনও রকম যৌন সংক্রমণ ও জনন স্নায়ুপথের সংক্রমণ আছে কি না বা রক্তাল্পতা বা ম্যালেরিয়া হয়েছে কিনা যেগুলির জন্য অতিরিক্ত কোনও ব্যবস্থার প্রয়োজন বা চিকিৎসার জন্য অন্য হাসপাতালে পাঠানো প্রয়োজন৷। যে সব ক্ষেত্রে জরায়ু সংক্রান্ত সাংঘাতিক সমস্যা আছে, সেখানে মহিলাটিকে আরও পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য উপযুক্ত হাসপাতালে পাঠাতে হবে৷
প্রাথমিক স্তরে গর্ভপাতের প্রয়োজনে আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যানিং (স্তরচিত্রণ) জরুরি নয়। যেখানে এই পরিষেবা মেলে, সেখানে গর্ভাধানের প্রায় ৬ সপ্তাহ পর আল্ট্রাসাউন্ড করলে স্থানভ্রষ্ট গর্ভাধান নির্ণয়ে সুবিধা হয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার দেরিতে গর্ভপাত করাতে হলে চিকিৎসক গর্ভপাত করানোর আগে ও করার সময় সুবিধার জন্য এই প্রযুক্তির সাহায্য নেন। যেখানে আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যান করানো হয়, সেখানে সম্ভব হলে প্রসব-পূর্ববর্তী সহিলাদের ও গর্ভপাতে ইচ্ছুক মহিলাদের স্ক্যানিং আলাদা আলাদা জায়গায় করা উচিত।
গর্ভাবস্থার সময়কাল আন্দাজ ও নিশ্চিত করার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মীদের উচিত মহিলাটির চিকিৎসা সংক্রান্ত পূর্বাপর বিবরণ নেওয়া ও গর্ভপাত করানোর সময় কাজে লাগবে এমন তথ্যগুলি বিবেচনা করা। মহিলাটি কী কী ওষুধ খাচ্ছেন, গর্ভপাত করানোর সময় ব্যবহৃত ওষুধের সঙ্গে সেগুলির কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হবে কিনা সে সম্পর্কেও তাঁদের জেনে নেওয়া ভালো। এইচআইভি সংক্রমণ আছে এমন কোনও মহিলার গর্ভপাত করানোর সময় অন্যান্য চিকিৎসার মতোই সতর্কতা নেওয়া প্রয়োজন। এ ধরনের মহিলাদের আলাদা ভাবে বিশেষ পরামর্শ দিতে হবে।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 12/16/2019