প্রয়োজন আছে এমন মহিলাদের গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে গর্ভপাত-পরিষেবা দেওয়ার প্রাথমিক ক্ষেত্রগুলিতে প্রভূত উন্নতি করা সম্ভব। এ রকম গর্ভপাত করানোর জন্য ও দরকার মতো উপযুক্ত চিকিত্সার কারণে অন্য জায়গায় পাঠানোর ক্ষেত্রে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া ও যথাযথ যন্ত্রপাতি এবং অন্যান্য জিনিস সরবরাহের ব্যবস্থা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে সব জায়গায় প্রাথমিক স্তরে সঠিক মানের পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা নেই, সেখানে মহিলাটিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বড় হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা থাকা দরকার।
সমাজভিত্তিক স্বাস্থ্যকর্মীরা মহিলাদের অবাঞ্ছিত মাতৃত্ব রোধ, গর্ভনিরোধক পদ্ধতি ও অসুরক্ষিত গর্ভপাতের বিষয়গুলি সম্পর্কে পরামর্শ দেওয়ার ব্যাপারে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। অকারণে দেরি না করে সুরক্ষিত ও আইনসম্মত গর্ভপাত করানোর ব্যাপারে মহিলাদের পরামর্শ দেওয়া ও অসুরক্ষিত গর্ভপাতের ফলে দেখা দেওয়া জটিলতার চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর ক্ষেত্রেও তাঁদের সাহায্য করা উচিত।
প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে সাধারণত মূল চিকিত্সার ব্যবস্থা থাকে ও কিছু প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী থাকেন। এখানে ভ্যাকুয়াম অ্যাসপিরেশন ও ওষুধের মাধ্যমে গর্ভপাত করানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে, কেননা এতে রাতে হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন পড়ে না। জাতীয় নীতি ও মান প্রতিষ্ঠা
কর্মচারীদের মধ্যে নার্স, ধাই, স্বাস্থ্যসহকারী ও কোনও কোনও ক্ষেত্রে চিকিত্সক থাকবেন। যে সব স্বাস্থ্যকর্মী ইতিমধ্যেই গর্ভাবস্থার লক্ষণগুলি বোঝার জন্য দ্বিহাস্তিক শ্রোণি পরীক্ষা ও আইডিইউ পদ্ধতি ব্যবহারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, তাঁদের ভ্যাকুয়াম অ্যাসপিরেশনের প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে। যেখানে পর্ভপাতের চিকিৎসা পদ্ধতিগুলি নথিভুক্ত ও পাওয়া যায়, সেখানকার স্বাস্থ্যকর্মীরাও ভ্যাকুয়াম অ্যাসপিরেশনের প্রয়োগ ও দেখাশোনা করতে পারেন ৷
স্বাভাবিক প্রসব ও স্বতঃস্ফূর্ত গর্ভপাতের মতোই কৃত্রিম গর্ভপাতের ক্ষেত্রেও প্রয়োজনে অবিলম্বে চিকিত্সার জন্য বড় হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা থাকা উচিত। এর জন্য প্রয়োজনে যে কোনও সময় যোগাযোগ করা যেতে পারে, এমন প্রশিক্ষিত কর্মী থাকা আবশ্যক।
জেলা স্তরের হাসপাতালগুলিতে গর্ভপাতের প্রাথমিক-শুশ্রূষা স্তরের সমস্ত পরিষেবারই ব্যবস্থা থাকা উচিত, এমনকী যেখানে এই সুবিধাগুলি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আছে, সেখানেও। গর্ভপাত করানোর জন্য বিশেষ ব্যবস্থাগুলির প্রয়োজন খুব কম হয়। তাই স্বাভাবিক অবস্থায় গর্ভপাতের ক্ষেত্রে বিশেষ উপাদানগুলি ব্যবহার করা উচিত নয়, বিশেষত যেখানে ব্যয়সংকোচ প্রয়োজন। বিশেষ যন্ত্রপাতি বা পরীক্ষা, যেমন প্রাথমিক অবস্থায় গর্ভপাতের ক্ষেত্রে ব্যয়সাধ্য আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যানিং-এর কোনও প্রয়োজন নেই৷ এ রকম গর্ভপাতের জন্য জেনারেল অ্যানাস্থেশিয়া ব্যবহার করারও কোনও দরকার নেই, কেননা এ ধরনের অ্যানাস্থেশিয়া গর্ভপাতের ঝুঁকি ও ব্যয় দুইই বাড়ায়। হাসপাতালগুলির বহির্বিভাগে গর্ভপাত পরিষেবার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এটি সুরক্ষিত, খরচ কম ও মহিলাদের যাতাযাতের পক্ষে সুবিধাজনকও বটে।
দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরের হাসপাতালগুলিতে গর্ভপাতের সবক’টি আইনসম্মত পরিষেবা দেওয়ার জন্য এবং অসুরক্ষিত গর্ভপাতের জটিলতার মোকাবিলা করার জন্য যথোপযুক্ত কর্মী থাকা বাঞ্ছনীয়। বিশেষত, গর্ভপাত করানোর ব্যাপারে ভবিষ্যত চিকিত্সকদের সঠিক শিক্ষা, দক্ষতা ও প্রশিক্ষণের জন্য স্বাস্থ্যশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে এই পরিষেবা থাকা খুবই দরকার।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/4/2020