অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

হিপ ও নি রিপ্লেসমেন্ট

হিপ ও নি রিপ্লেসমেন্ট

হিপ ও নি রিপ্লেসমেন্টের ক্ষেত্রে ব্যথা হওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে বিচার করা প্রয়োজন। হিপ ও নি জয়েন্টের ব্যথা অসহনীয় হলে ওই জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট করা ব্যথার উপশম করা যেতে পারে। হিপ-এর ক্ষেত্রে জয়েন্টের চারদিকে অসহনীয় ব্যথা হতে পারে। নি-এর ক্ষেত্রেও জয়েন্ট এবং তার চারদিকে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। ব্যথার উৎস এবং ব্যথার স্থানটিকে অনেক সময় সঠিকভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব হয় না। অনেক সময় কাজের মধ্যে থাকলে ব্যথা বাড়ে, আবার বিশ্রামে থাকলে ব্যথা কমে যায়। কখনও দিনেরবেলা অনেক বেশি পরিশ্রমের সময় ব্যথা এমনভাবে বেড়ে যায় যে দিনের শেষে বিশ্রামরত অবস্থায়ও সেই ব্যথা চলতেই থাকে। রাত্রে বিশ্রামের সময়েও যদি ব্যথা চলতেই থাকে তবে মনে করতে হবে যে অপারেশন ছাড়া এর গতি নেই।

কাজের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা

হাঁটা, বিশেষ করে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠা অনেক কষ্টকর হয়ে থাকে এই সমস্ত ক্ষেত্রে। নানা কারণে জয়েন্টের মধ্যে বিকৃতি ঘটে গেলে জয়েন্টে অস্থির সঞ্চালনের ক্ষমতা কমে যায়। ওই অবস্থায় রোগীদের পক্ষে জুতো, মোজা ইত্যাদি পায়ে দেওয়ার অভিজ্ঞতাও অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে থাকে। তাদের মধ্যে নানা ধরনের কাজকর্মের ক্ষেত্রেও সীমাবদ্ধতা তৈরি হয়। ব্যথায় কাবু হয়ে তারা অনেক কাজই স্বাভাবিক নিয়মে করতে পারে না। এই রকম অবস্থা তৈরি হলে রোগীদের জয়েন্ট রিপ্লেস করতে হয়। জয়েন্ট রিপ্লেস করালে তারা আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারে।

আড়ষ্টতা

কোনও কোনও রোগীদের দেহে এমন জিনিসও দেখা যায় যে তাদের জয়েন্টে তেমনভাবে কোনও ব্যথা হয়তো নেই, তবে জয়েন্টের মধ্যে রয়েছে আড়ষ্টতা। ওই অবস্থায় জয়েন্টের সঞ্চালন কমে যায়, ফলে তারা স্বাভাবিক ছন্দে চলাফেরা করতে পারে না। এইরকম পরিস্থিতিতেও জয়েন্ট রিপ্লেস করানো প্রয়োজন। অ্যাঙ্কিলোসিং স্পন্ডিলাইটিসের ক্ষেত্রে জয়েন্টে আড়ষ্টতা দেখা যায়। অ্যাঙ্কিলোসিসের ক্ষেত্রেও রোগীরা জয়েন্টে ব্যথা অনুভব না করলেও তারা স্বাভাবিকভাবে অঙ্গ সঞ্চালনে অক্ষম হয়ে থাকে। হিপ জয়েন্টের থোরাকোলাম্বার স্পাইন অনেক সময় শক্ত হয়ে জয়েন্টের স্বাভাবিক কাজে বিঘ্ন ঘটায়। ওই সমস্ত রোগীরা স্বাভাবিকভাবে হাঁটা-চলা করতে পারে না। হাঁটতে হলে তাদের সহায়ক কিছু প্রয়োজন, তা না হলে তাদের আশ্রয় নিতে হয় বিছানাতে। যে সমস্ত রোগীদের আগে ছোট বয়সে ইনফেকশন কিংবা অন্য কোনও সার্জিক্যাল কারণে হিপ ফিউশন হয়েছিল, তাদের ক্ষেত্রে ব্যথা ছাড়াই হিপ জয়েন্টের আড়ষ্টতা দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

বয়স

অনেক সময় দেখা গিয়েছে যে হিপ ও নি রিপ্লেসমেন্ট হয়ে থাকে ৬০ থেকে ৮০ বছর বয়সি মানুষের দেহে। খুব কম ক্ষেত্রেই ছোটদের বা টিনএজের মানুষের দেহে জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টের ঘটনা দেখা যায়। এই বয়সীমার মানুষের দেহে অপারেশনের সফলতার বিচার করা হয়, তারা আবার স্বাভাবিক ছন্দে চলাফেলা করতে পারছে কি না, কিংবা তাদের জয়েন্টের ব্যথা কমে গিয়েছে কি না ইত্যাদি বিষয়ের ওপর।

উপরিউক্ত লক্ষণযুক্ত রোগগুলি হল

অস্টিওআর্থারাইটিস (ওএ)

জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টের ক্ষেত্রে একটি সাধারণ কারণ হল অস্টিওআর্থারাইটিস বা ওএ। এই রোগ এইরকম হতে পারে— প্রাইমারি ওএ। ৪০ বছর বয়সি ৪০ শতাংশ মানুষের দেহে রেডিওগ্রাফি করে ওএ-র অস্তিত্ব লক্ষ করা যায়। এর মধ্যে অর্ধেকের দেহে রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। এটি এক ধরনের বংশানুক্রমিক রোগ বলেও মনে করা যেতে পারে। এই ধরনের রোগীদের দেহে জয়েন্ট রিপ্লেস কিংবা অনুরূপ অপারেশনের মাধ্যমে রোগের নিরাময় করার প্রয়োজন হয়। সেকেন্ডারি ওএ। এটি হল জয়েন্টে আঘাত পাওয়া, লিগামেন্ট ইনজুরি, ইনফেকশন কিংবা অন্য কোনও কারণে ঘটা অস্টিওআর্থারাইটিস বা ওএ। এক্ষেত্রে জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্ট জরুরি।

কার্টিলেজ ডেসট্রাকশনের

কার্টিলেজ ডেসট্রাকশনের—এর অন্যান্য কারণ
১. রিউমেটয়েড আর্থারাইটিস (আরএ)
২. হিমোফিলিয়া
৩. সেরোনেগেটিভ আর্থারাইটিস
৪. অ্যাভাস্কুলার নেকরোসিস। এটি হতে পারে ইডিওপ্যাথিক অথবা স্টেরয়েড-ইনডিউসড
৫. গাউট এবং অন্যান্য ক্রিস্টাল ডিপোজিশন ডিজিস
৬. খুব সামান্য ক্ষেত্রে যার মধ্যে রয়েছে বোন ডিসপ্লেসিয়াল এবং বোন ক্যানসার (যথা অস্টিওসারকোমা)। বোন ডেসট্রাকশন-এর সময় সাধারণভাবে প্রয়োজন হয় অপ্রচলিত ‘ফিক্সড-হাউঞ্জ’-এর ব্যবহার অথবা কনস্ট্রেনড নি জয়েন্ট প্রস্থেসেস।

ওবেসিটি

যে সমস্ত রোগীদের দেহে এই সার্জারি করা প্রয়োজন তাদের মধ্যে রয়েছে অস্টিওআর্থারাটিস, রিউমেটয়েড আর্থারাইটিসসহ জয়েন্ট আর্থারাইটিস অথবা পোস্ট-ট্রমাটিক আর্থারাইটিস। নন-স্টেরয়েড, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ড্রাগ (এনএসএআইডি) প্রয়োগ, ফিজিক্যাল থেরাপি, স্টেরয়েড ইনজেকশন ইত্যাদির মতো নন-সার্জিক্যাল চিকিৎসায় অনেক সময় রোগের লক্ষণ তেমন প্রকটভাবে আর প্রকাশ পায় না, তবে রোগীদের ওয়াকার বা লাঠির সাহায্য নিয়ে হাঁটতে হয়।
জয়েন্টে আর্থারাইটিস রোগীদের প্রায় ৯০ শতাংশেরই জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টের প্রয়োজন। আর্থারাইটিস ছাড়াও অনেক সময় আঘাতের কারণে হিপ বোন ভেঙে গেলে কিংবা অস্টিওনেকরোসিস (অপর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহের কারণে বোন সেল-এর মৃত্যুজনিত সমস্যা)-এর মতো অন্যান্য অসুখের ক্ষেত্রে সেটা সারানোর জন্য হিপ রিপ্লেসমেন্টের প্রয়োজন হয়।

অপারেশন পরবর্তী পরিচর্যা

জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টের পর রোগীদের পরিচর্যা
১. হাসপাতালে অপারেশনের পরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নি মুভমেন্ট করানোর ওপর জোর দেওয়া হয়।
২. ভালো অ্যানালজেসিয়া প্রয়োজন। অনেক সময় পেশেন্ট-কন্ট্রোল্ড মেথড প্রয়োগ করা হয়। সাধারণভাবে এপিডুরাল মেথড প্রয়োগ করা হয়।
৩. ফিজিওথেরাপি ধারাবাহিকভাবে এটি করে যেতে হয়। এই সময় রোগীদের বিশেষ কিছু ব্যায়াম শেখানো হয়, যা তারা নিয়মিতভাবে করে থাকে। অধিকাংশ রোগীরাই অপারেশনের দ্বিতীয় দিন থেকেই হাঁটতে পারে। যতটা সহ্যের মধ্যে থাকে (দিনে অন্তত ২০৩ বার), সেই মতো হাঁটাচলা করতে হবে। প্রত্যেকবারই হাঁটার সময় একটু একটু করে বাড়াতে হবে। প্রথম ৬ সপ্তাহ হাঁটাচলার মধ্যে স্বাভাবিকতা না আসা পর্যন্ত লাঠি অথবা ওয়াকারের সাহায্য নিয়ে হাঁটতে হবে।
অনেক সময় ফোলা ভাব দেখা যায়। সেটা কমানোর জন্য ক্রাইওথেরাপি অথবা বরফের কমপ্রেশন নিতে হয়। জয়েন্ট রিপ্লেসমেন্টের পর কয়েকমাস পর্যন্ত জয়েন্টে ফোলা ভাব দেখা যায়। নিয়মিতভাবে আইস প্যাক ব্যবহার করলে ওই ফোলা ভাব দূর হয়ে যায়। অপারেশনের পর প্রথম কয়েক সপ্তাহ জয়েন্টে দিনে ৩ বা ৪ বার আইস প্যাক দিতে হবে। এক মাস পর এটা কেবলমাত্র রাত্রে দিলেই চলবে। ২ মাস পর ফিজিক্যাল থেরাপি সেসনের পরে ১ বার দিলেই চলবে। এইভাবে ধীরে ধীরে রোগীরা সুস্থ হয়ে ওঠে। জয়েন্টের ফোলা ভাব দূর হয়ে গিয়ে জয়েন্ট ফের আগের মতোই শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

অপারেশনের পর পাঁচ দিন থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রোগীকে ছাড়া হয়।

তবে সেটা নির্ভর করে রোগীর সুস্থ হয়ে ওঠার অগ্রগতির ওপর। তা হলেও যে বিষয়ের ওপর নজর রাখা হয়, সেগুলি হল—

১. ক্ষতস্থান দ্রুত নিরাময় হচ্ছে কি না।
২. সংশ্লিষ্ট অঙ্গের সঞ্চালন সন্তোষজনক কি না।
৩. রোগী প্রত্যাশিত মাত্রায় মুভমেন্ট করতে পারছে কি না।
৪. অন্য কোনও রকমের জটিলতা তৈরি হয়েছে কি না।
৫. অর্থোপেডিক ফলো-আপ সাধারণভাবে করতে হবে প্রায় ১০ দিন।

সাধারণভাবে রোগীর অবস্থা পর্যালোচনা করতে হবে এই বিষয় নিয়ে

অ্যানালজেসিয়া: হাসপাতাল কিংবা রিহ্যাব ফেসিলিটিতে থাকলে অধিকাংশ রোগীরই প্রয়োজন হয় নারকোটিক পেইন মেডিসিনের। সার্জারির পরে রোগীরা বাড়ি ফিরে গেলে তখন অনেক সময় তারা ওই মেডিসিন চায়। ওই মেডিসিনে অনেক সাইড এফেক্ট থাকে। সে কারণেই এই ধরনের নারকোটিক পেইন মেডিসিনের মাত্রা একটু একটু কমিয়ে আনা প্রয়োজন। অনেক রোগীর ক্ষেত্রে অপারেশনের পর ৮ থেকে ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত ফিজিক্যাল থেরাপির আগে নারকোটিক পেইনি মেডিসিন দেওয়া হয়।
১. ক্ষতস্থানের পরিচর্যা করা।
২. রিঅ্যাস্যুরেন্স।
৩. জটিলতা তৈরি হলে সেগুলিকে চিহ্নিত করা।
৪. থ্রম্বোএম্বোলিজম প্রোফাইলোক্সিস পর্যালোচনা করা। রোগী বাড়িতে ফেরার পরেও এটি চালিয়ে যেতে হবে।
৫. যতদিন না রোগী একেবারে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে ততদিন পর্যন্ত রোগীর অবস্থার পর্যালোচনা।

অপারেশনের কতদিন পর ভালোভাবে চান করা যাবে

১. ভালোভাবে চান করার আগে একেবারে সেরে ওঠা প্রয়োজন। তা না হলে জটিলতা দেখা দিতে পারে। অপারেশনের ১০-১৪ দিন পরে ক্ষতস্থানের ব্যান্ডেজ খোলা যেতে পারে। তখন ওই স্থানে জল প্রতিরোধক ড্রেসিং করে ভালোভাবে চান করা যেতে পারে। তবে অপারেশনের পর ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত ক্ষতস্থানে যাতে জল না লাগে সেই দিকে নজর রাখা উচিত।
২. ড্রাইভিং: অপারেশনের ৪-৬ সপ্তাহ পর ড্রাইভিং প্রত্যাশা করা যাতে পারে।
৩. কাজে ফিরে আসা: এটা নির্ভর করছে কাজের প্রকৃতির ওপর। তবে অপারেশনের পর প্রথম আট সপ্তাহ কোনও কাজ না করাই ভালো।
৪. ভ্রমণ: থ্রম্বোএম্বোলিক জটিলতাকে প্রতিরোধ করার জন্য ভ্রমণের সময় কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বিমান বন্দরে মেটালিক ডিটেক্টরের ভিতর দিয়ে যাওয়ার সময় ওই ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারে। ওই অবস্থায় প্রতিরোধ মেডিক্যাল এমার্জেন্সি আইডেন্টিফিকেশন ব্রেসলেট কিংবা অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ কার্যকরী হতে পারে।
৫. অন্যান্য কাজকর্ম: অপারেশনের পর স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য সাঁতার কাটা অত্যন্ত ভালো ব্যয়াম হতে পারে। নির্দিষ্ট সময় পর (অন্তত ৬ সপ্তাহ) ক্ষতস্থান নিরাময় হয়ে গেলে এবং ব্যান্ডেজ খুলে ফেলার পর জটিলতা কমে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে সাঁতার কাটা উচিত। এছাড়া ড্যান্সিং, গলফ (স্পাইক ছাড়া জুতো এবং কার্ট ব্যবহার করে) এবং সাইক্লিং (সমতল স্থানে) করা যেতে পারে। এই সমস্ত কাজকর্ম করার সময় নজর রাখতে হবে জয়েন্টে যেন বেশি চাপ না পড়ে। তবে জয়েন্টে চাপ পড়তে পারে এমন খেলা যেমন টেনিস, স্কোয়াশ, জাম্পিং, স্কি, জগিং ইত্যাদি না করাই ভালো।

সূত্র: বর্তমান

সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate