শৌচাগার ব্যবস্থা যে সব বিষয়ের উপর নির্ভর করে, তাদের ৯টি মাপকাঠিতে মাপা হয়েছে। এদের মধ্যে ৫টি — নলবাহিত জল, বিদ্যুৎ, টিভি, পেশার ধরন এবং এইচআইভি সচেতনতা—আধুনিকীকরণের মাত্রার সঙ্গে জড়িত। নলবাহিত জল, বিদ্যুৎ বা টিভি বাড়িতে থাকা না-থাকা থেকে সংশ্লিষ্ট পরিবারের জীবনযাত্রার আধুনিক সুবিধাগুলির ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা করা যায়। এইচআইভি সম্পর্কিত জ্ঞান দিয়ে পরিমাপ করা যায় আধুনিক স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত সচেতনতা, যা ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা ও শৌচাগার ব্যবহারের ক্ষেত্রে অপরিহার্য। ধর্মীয় বিশ্বাসকে ‘ডামি’ উপাদান দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। হিন্দু এবং অহিন্দু। দারিদ্র পরিমাপের ক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত ও তার উপরের স্তরকে ০ এবং বাকিদের ১ দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। সারণি-৩-এ এই ভাগগুলি রয়েছে। চতুর্থ সারণিতে তিনটি নির্ভরশীল উপাদানের সাপেক্ষে ৯টি স্বাধীন উপাদানের বিভাজন দেখানো হয়েছে। রিগ্রেসনের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে পঞ্চম সারণিতে। ভিত্তি বিভাগ ধরা হয়েছে শৌচাগারের সুবিধা থাকা না থাকাকে। প্রথম পর্বে কোনও সুবিধা না থাকার সাপেক্ষে রাখা হয়েছে ফ্লাশযুক্ত শৌচালয়কে। দ্বিতীয় পর্বে শৌচালায় না থাকার সঙ্গে খাটা পায়খানাকে রাখা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে যাঁদের বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই তাঁদের তুলনায় যাঁদের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে, তাঁদের ফ্লাশযুক্ত শৌচাগার থাকলে তাঁরা তিন গুণ বেশি ভাগ্যবান।
শিক্ষা প্রাথমিক স্তরের চেয়ে বেশি হলে, বাড়িতে নলবাহিত জল ও টেলিভিশন থাকলে, কর্মক্ষেত্রে কায়িক পরিশ্রমের বা আধুনিক ক্ষেত্রে কাজে নিযুক্ত হলে এবং এইডস সচেতনতা থাকলে তাঁদের ফ্লাশযুক্ত শৌচাগার থাকার সম্ভাবনা বেশি।
সাধারণভাবে হিন্দুরা শৌচাগার ব্যবহারে তেমন উৎসাহী নন বলে ধারণা রয়েছে। আমাদের সমীক্ষার ফল তাকেই সমর্থন করছে। আমরা দেখেছি, শৌচালয়ের সুবিধা নেই এমন হিন্দু পরিবারের সংখ্যা অন্যান্য গোষ্ঠীর তুলনায় উল্লেখযোগ্য ভাবে বেশি। আবার বিদ্যুৎ, টেলিভিশন, নলবাহিত জল যাঁদের বাড়িতে রয়েছে, তাঁদের ফ্লাশযুক্ত শৌচাগার ব্যবহারের প্রবণতা বেশি। স্বল্প শিক্ষা ও স্বল্প আয়ের নিম্ন আর্থসামাজিক শ্রেণির কাছে শৌচালয়ের সুবিধা এখনও সে ভাবে পৌঁছয়নি। সুবিধা পৌঁছনোর জন্য সর্বাগ্রে জোর দেওয়া উচিত সচেতনতা বৃদ্ধির উপর। রাজ্যভিত্তিক সচেতনতার পরিমাপ ঠিক করে এই কাজ করা প্রয়োজন।
সুত্রঃ যোজনা জানুয়ারী ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019