শৌচাগারের সংস্থান নেই বিশ্বের এমন ২৬০ কোটি মানুষের মধ্যে ৬৫ কোটিরই বাস ভারতে। পরিচ্ছন্ন স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে এমন বিপুল সমস্যার মোকাবিলায় ভারত সরকার ‘মহাত্মা গান্ধী স্বচ্ছ ভারত কর্মসূচির’ সূচনা করেছে। এই কর্মসূচির সাফল্য, বিশেষত এর ধারাবাহিকতা নির্ভর করছে সামাজিক কাঠামোগত শক্তিগুলির সঙ্গে মেলবন্ধনের উপর। বর্তমান নিবন্ধের উদ্দেশ্য, ভারতে স্বাস্থ্যবিধি ও পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে সার্বিক শৌচাগার ব্যবস্থার সামাজিক প্রেক্ষাপট খুঁজে বের করা। এ ক্ষেত্রে আমরা বহুমুখী উপাদানসম্পন্ন একটি মডেল গ্রহণ করে জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা থেকে পাওয়া তথ্যের সঙ্গে তার গাণিতিক বৈধতা যাচাই করেছি। আমরা দেখেছি শৌচাগার ব্যবস্থার উন্নয়নে আধুনিকীকরণের বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সর্বোপরি এই কর্মসূচিকে সফল করতে প্রয়োজন সুদৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছার। এর মাধ্যমেই আধুনিক সুযোগসুবিধা এবং জনস্বাস্থ্য শিক্ষা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব।
বিশ্বের জনসংখ্যা ২০৫০ সালের মধ্যে ৯৬০ কোটিতে পৌঁছে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশই শহুরে এলাকায় বাস করবে। এর অর্থ হল জনসংখ্যা বর্তমানের তুলনায় আরও ২৪০ কোটি বাড়বে। শহরের জনসংখ্যা বাড়বে ১২ শতাংশ। ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলিতে জন্মহার কমলেও জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এখনও বেশ বেশি। উন্নত দেশগুলির তুলনায় উন্নয়শীল দেশগুলিতে শহরে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা কম হলেও বিশ্বের মোট শহুরে জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ এশিয়ার উন্নয়নশীল দেশগুলির অধিবাসী। এই বিস্ফেরণ ও শহরায়নের জেরে শৌচাগার ও নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে জনস্বাস্থ্যের উপর।
অধিকাংশ বিকাশশীল দেশেই সরকারি কর্মসূচি ও নীতিসমূহ যে শৌচালয় ও নিকাশি ব্যবস্থার মৌলিক সুবিধা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, তা বোঝা যায় একটি পরিসংখ্যানেই। ১৯৯০ থেকে ২০০৮ — এই ১৮ বছরে বিশ্বের মাত্র ৭ শতাংশ মানুষের কাছে এই সুবিধা পৌঁছেছে। ১৯৯০ সালে এই সুবিধা পেতেন বিশ্বের জনসংখ্যার ৫৪ শতাংশ। ২০০৮ সালে তা হয়েছে ৬১ শতাংশ। এখনও বিশ্বের প্রায় ২৬০ কোটি মানুষ শৌচালয়ের সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
সুত্রঃ যোজনা জানুয়ারী ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020