শৌচলায়ের সমস্যা আমাদের দেশের বড় সমস্যাগুলির অন্যতম। সমস্যার এই ব্যাপকতার জন্যই ২০০০ সালে সহস্রাব্দ উন্নয়ন পরিকল্পনায় বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে শৌচালয়ের সুবিধা না পাওয়া মানুষজনের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নেওয়া হয়। শৌচালয় ব্যস্থার এই অপ্রতুলতার সঙ্গে একাধিক আর্থিক ও সামাজিক বিষয় জড়িত। জল ও শৌচাগার সংক্রান্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, এই অপ্রতুলতার জন্য প্রায় ৫৪০০ কোটি ডলার নষ্ট হয়, যা ২০০৬ সালের হিসেব মতো ভারতের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জল ও স্বাস্থ্যবিধি প্রকল্প, ২০১১)-এর ৬.৪ শতাংশ। এর প্রায় ৭২ শতাংশই স্বাস্থ্যজনিত কারণে। নড়বড়ে শৌচালয় ব্যবস্থার সামাজিক কুফল এখনও সে ভাবে খতিয়ে দেখা হয়নি। যে কুফল খতিয়ে দেখা অত্যন্ত জরুরি। এ সংক্রান্ত তথ্য অসম্পূর্ণ ও অনথিবদ্ধ। ভারতে ৬৫ কোটির কাছাকাছি মানুষ শৌচাগারের সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
এই সমস্যা মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংগঠনগুলিকেও উদ্যোগ নিতে হবে। সরকারি কর্মসূচিগুলিতে মূলত গোষ্ঠীভিত্তিক প্রচারের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। এর প্রধান লক্ষ্য হল ২০১৭ সালের মধ্যে প্রকাশ্যে মলত্যাগ বন্ধ করা। এ জন্য চাপসৃষ্টি এবং লক্ষ্যপূরণকারীদের পুরস্কৃত করার দ্বিমুখী কৌশল নেওয়া হয়েছে। বর্তমান সরকার মহাত্মা গান্ধী স্বচ্ছ ভারত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য, দেশের এক হাজারটি শহরকে পরিচ্ছন্ন করা এবং মাথায় করে মলবহনের অমানবিক প্রথা সম্পূর্ণ বন্ধ করা। এই কর্মসূচির ধারাবাহিকতা ও সাফল্য নির্ভর করছে সামাজিক কাঠামোগত শক্তিগুলির সঙ্গে এর মেলবন্ধনের উপর। ভারতীয় পরিবারগুলিতে শৌচাগার ব্যবস্থা যে সব বিষয়ের উপর নির্ভর করে তা খুঁজে বের করা একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। তৃতীয় জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা থেকে পাওয়া তথ্য এখানে ব্যবহার করা হয়েছে। এই তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখানো হয়েছে, শৌচাগারের সঙ্গে আধুনিক স্বাস্থ্যবিধির যোগসূত্র কোথায়। কেন শৌচাগার আন্দোলন তেমন অগ্রসর হতে পারেনি তার ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে।
সুত্রঃ যোজনা জানুয়ারী ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/19/2020