দেশে ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় যে তথ্য উঠে এসেছে তা কপালে ভাঁজ পড়ার মতো। পশ্চিমবঙ্গে ৪০ শতাংশের বেশি ক্যানসার রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা যান। বেঙ্গল অঙ্কলজি ফাউন্ডেশন-এর প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষা থেকে এই তথ্য জানা যাচ্ছে। সমীক্ষায় আরও বলা হচ্ছে যে এই রোগীদের এক চতুর্থাংশের রোগই ঠিকমতো নির্ণয় হয়ে ওঠে না এবং বাকিদের কাছেও ক্যানসার রোগের আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা পৌঁছয় না। ফলে রোগীটির কোনও চিকিৎসা হয় না।
চিকিৎসাহীন ভাবে রোগটি শরীরের মধ্যে বিস্তার ঘটাতে থাকে।
প্রত্যেক বছর এ রাজ্যে ৭০০০০ থেকে ৮০০০০ রোগীর ক্যানসার ধরা পড়ে। যদিও পশ্চিমবঙ্গে ক্যানসার রোগীর সংখ্যা দু লাখ, বছরে মাত্র ছয় হাজার নতুন রোগী চিকিৎসার সুযোগ পেয়ে থাকেন কলকাতায়। বাস্তবিক কলকাতা ছাড়া রাজ্যের অন্য শহরগুলিতে এই রোগের চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সুযোগসুবিধা প্রায় নেই বললেই চলে। ফলে সরকারি হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা শুরু করার জন্য সারা দেশের মধ্যে এই শহরেরই রোগীদের সব চেয়ে বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয় – গড়ে দুই সপ্তাহ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যতক্ষণ পর্যন্ত না জেলাগুলিতে এবং কলকাতাতেও ক্যানসার রোগের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতি হচ্ছে, তত দিন এই অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব নয়। বর্তমানে কলকাতার নামী দামি কিছু বেসরকারি হাসপাতাল ছাড়া রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলির মধ্যে কেবলমাত্র কলকাতার তিনটি এবং অন্যান্য জেলার পাঁচটি মেডিক্যাল কলেজে ক্যানসারের চিকিৎসা সম্ভব। তবে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, সব জেলাতে ক্যানসার চিকিৎসার সুযোগসুবিধা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে এবং কলকাতা থেকে বিশেষজ্ঞদের জেলায় পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। প্রসঙ্গত, জাতীয় স্তরে ক্যানসার রোগের বিস্তার নিয়ে প্রকাশিত আর একটি রিপোর্ট অনুযায়ী ২০১২ সালে সারা দেশে ক্যানসার রোগীর সংখ্যা ছিল ১০,৫০,২০৪। ২০১৩ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১০,৮৬,৭৮৩ এবং ২০১৪ সালে সংখ্যাটি আরও বেড়ে দাঁড়ায় ১১,১৭,২৬৯।
সূত্র : দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া এবং দ্য হিন্দু
সর্বশেষ সংশোধন করা : 10/15/2019