অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

মস্তিষ্কের অলিগলি সম্পর্কে সচেতন করবে প্রেসিডেন্সি

মস্তিষ্কের অলিগলি সম্পর্কে সচেতন করবে প্রেসিডেন্সি

ঈশান অবস্থির কথা মনে পড়ে? ‘তারে জমিন পর’ ছবির গল্প জমে উঠেছিল এই ঈশানকে কেন্দ্র করেই। পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়া, সকলের থেকে আলাদা ছোটছেলের না-পারার লম্বা তালিকায় অতিষ্ঠ বাবা-মা বুঝতেই পারেননি যে ঈশানের মস্তিষ্কে দানা বেঁধেছিল গভীর অসুখ। সেই ছবির হাত ধরেই অনেকেই প্রথম বার জেনেছিলেন ‘ডিসলেক্সিয়া’-র কথা। কিন্তু এমন ছবি তো আর বারবার হয় না। আর মস্তিষ্কের এমন সব অসুখ সম্পর্কে এখনও সে ভাবে তৈরি হয়নি সচেতনতা। তাই জটিল অসুখে জেরবার রোগীরাও সচেতনতার অভাবে ‘পাগল’-এ পরিণত হচ্ছে আকছার। অথচ আর পাঁচটা অসুখের মতো এ ধরনের রোগেরও চিকিত্সা আছে। তাতে বেশির ভাগ সেরেও ওঠে। কিন্তু মানুষকে বোঝাবে কে? সচেতনতা তৈরি করতেই বা কে নেবে পদক্ষেপ? এ সব প্রশ্ন যন্ত্রণা দিচ্ছিল শহরেরই এক নাগরিককে। পেশায় অধ্যাপক হওয়ার কারণে এবং নিজের বিষয়ের সঙ্গে এর যোগাযোগ দৃঢ় হওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছিল আরও বেশি। তাই ঘরে বসে না থেকে নিজেই নেমে পড়েছেন পথে। তিনি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেসের অধ্যাপিকা পিয়ালি মুখোপাধ্যায়। তাঁর নেতৃত্বেই প্রেসিডেন্সির একদল ছাত্রছাত্রী সংঘবদ্ধ হয়েছেন মস্তিষ্কের নানা সমস্যা ও রোগ সম্পর্কে সাধারণের মধ্যে সচেতনতা ছড়াতে। কোনও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে নয়, বিশ্ববিদ্যালয়কে পাশে নিয়ে শহরের নানা স্কুল-কলেজে সচেতনতা শিবিরের মতো নানা কর্মসূচির মাধ্যমে সহ-নাগরিকদের ভাবিয়ে তুলতে চাইছেন পিয়ালিদেবীরা। সেই উদ্দেশ্যেই প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ‘মস্তিষ্ক সচেতনতা সপ্তাহ’-এর আয়োজন করেছেন তাঁরা। যেখানে আলোচনার মাধ্যমে তো বটেই, এমনকী প্রেসিডেন্সিরই মাঠে মেলায় ঘুরতে ফিরতেও নানা স্টলে বিভিন্ন মডেল, চার্টের মাধ্যমে মস্তিষ্কের বহু জটিল বিষয় হাতেকলমে জানার সুযোগ পাবেন আগ্রহীরা।

কেন এমন উদ্যোগ? পিয়ালিদেবী বলছেন, ‘আমি গবেষণা করেছি নিউরো-বায়োলজির উপর। ছাত্রাবস্থা থেকেই এ ধরনের রোগ ও মস্তিষ্কের সমস্যা নিয়ে সচেতনতা তৈরির ইচ্ছে ছিল। কিন্তু পড়াশোনা এবং গবেষণা সূত্রে দীর্ঘদিন বিদেশে (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) থাকায় সুযোগ হয়নি। প্রেসিডেন্সিতে অধ্যাপিকা হিসেবে যোগ দেওয়ার পর পুরোনো ইচ্ছেটা আরও জোরদার হল। প্রথমে কয়েক জন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে কাজ শুরু করেছিলাম। এখন আমরা ৩০ -৩৫ জন। কেবল আমার বিভাগের পড়ুয়ারাই নয়, পদার্থবিদ্যা, সমাজতত্ত্ব থেকেও বহু পড়ুয়া যোগ দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এবং উপাচার্যের ভূমিকাও সদর্থক। তাই এই কাজটি এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’ কী ধরনের সচেতনতা তৈরি করছেন পিয়ালিদেবীরা? বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস-এর ছাত্র সায়ন্তন দত্তের কথায়, ‘পড়ুয়াদের সচেতন করতে ইতিমধ্যে আমরা একাধিক স্কুলে ‘অ্যাওয়ারনেস ক্যাম্প’ করেছি। সেখানে ডিসলেক্সিয়া ছাড়াও মাল্টিপল পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার, সেরিব্রাল পলসি, ডিমেনশিয়ার মতো রোগ কেন হয়, কী ভাবে সেই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়, কী করে বুঝব এই রোগ কারও হয়েছে কি না এ বিষয়ে পড়ুয়াদের সজাগ করা হয়েছে।’প্রেসিডেন্সির সচেতনতা সন্তাহে অবশ্য কেবল অসুখ-বিসুখ নিয়েই কাজ হচ্ছে না। ওই বিভাগেরই ছাত্রী সৌমি মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, স্বপ্ন দেখার কারণ থেকে, স্মৃতি কী ভাবে তৈরি হয়, মস্তিস্ক কী ভাবে কাজ করে, দেহ পরিচালনায় মস্তিষ্কের ভূমিকাই বা কতটা, সে সবও একেবারে হাতেকলমে জানতে পারবেন দর্শকরা। আয়োজকদের দাবি, শহরের প্রায় ৬০টি স্কুলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমন্ত্রণ গিয়েছে কলকাতার বিভিন্ন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়েও। পিয়ালিদেবীর আশা, মাথা নিয়ে মাথা ঘামাতে এমন অভিনব মেলায় মানুষের ঢল নামবেই! শহরের এক স্কুলে চলছে ওয়ার্কশপ।

সূত্র : জয় সাহা, এই সময়, ৭ মার্চ ২০১৫

সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate