অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

ক্যানসার হটিয়ে চাকরি উদ্ধারের যুদ্ধ

ক্যানসার হটিয়ে চাকরি উদ্ধারের যুদ্ধ

ছুটি নিয়েছিলেন ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য। ক্যানসার পিছু হটেছে। কিন্তু ছুটির ছুতোয় কেড়ে নেওয়া হয়েছে তাঁর ১৬ বছরের শিক্ষকতার চাকরি। মারণ রোগকে হার মানানোর পরে চাকরি উদ্ধারের লড়াইয়ে নেমেছেন ডব্লিউডব্লিউএ কাশীপুর ইংলিশ স্কুলের শিক্ষিকা শবরী চট্টোপাধ্যায়। স্কুল-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সেই লড়াই চালিয়ে যেতেই নিরুপায় শিক্ষিকা দ্বারস্থ হয়েছেন মহিলা কমিশনের। ঠিক কী ঘটেছে, তা জানতে কমিশন মঙ্গলবার ডেকে পাঠিয়েছিল ওই স্কুলের অধ্যক্ষা ঝুমুর বাজপেয়ী এবং শবরীদেবীকে। কমিশনের সদস্যাদের সামনে হাজির হয়ে ঝুমুরদেবী জানান, শবরীদেবী নাকি যথাযথ পদ্ধতি মেনে চিকিৎসার জন্য ছুটি নেননি। তাই স্কুলের পরিচালন সমিতি ওই শিক্ষিকার চাকরি কেড়ে নিয়েছে এবং তারা তা ফেরত দিতেও রাজি নয়।

শবরীদেবীর দাবি, তিনি নিয়ম মেনেই ছুটি নিয়েছিলেন। ক্যানসারের মতো রোগে আক্রান্ত এক জনের ছুটি নেওয়ার পদ্ধতি ঠিকঠাক নয় বলে যুক্তি খাড়া করে স্কুল-কর্তৃপক্ষ তাঁর চাকরিটাই কেড়ে নেওয়ায় ওই শিক্ষিকা হতভম্ব। তিনি কাজে যোগ দিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু অনৈতিক ভাবে তাঁকে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে স্কুল-কর্তৃপক্ষের কাছে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন শিক্ষিকা। তার উল্লেখ করে কমিশনকে ঝুমুরদেবী জানিয়েছেন, আর কোনও কথা নয়। বিষয়টির নিষ্পত্তি এ বার আদালতেই হবে। সংবাদমাধ্যমেও মুখ খুলতে চাননি তিনি। এই টানাপড়েনে শবরীদেবীর চাকরি উদ্ধার আরও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

ওই স্কুলের আপার কেজি-র শিক্ষিকা শবরীদেবীর জিভে ক্যানসার ধরা পড়ে গত বছরের গোড়ার দিকে। চিকিৎসার জন্য তিনি দীর্ঘদিন স্কুলে যেতে পারেননি। অধ্যক্ষা ঝুমুরদেবীকে চিঠি লিখে এবং ই-মেল মারফত ছুটি নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন বলে শবরীদেবীর দাবি। ওই শিক্ষিকা বলেন, “সুস্থ হওয়ার পরে গত ১০ সেপ্টেম্বর ফের স্কুলে যোগ দেওয়ার কথা ছিল আমার। তার এক দিন আগে অধ্যক্ষা আমাকে ডেকে পাঠান। তখনই তিনি জানান, আমার কথাটথা নাকি তিনি বুঝতেই পারছেন না। তাই খুদে পড়ুয়াদেরও তা বোধগম্য হবে না।”

যদিও শবরীদেবীর কথাবার্তায় অস্পষ্টতা নেই। তিনি যে সুস্থ, সেই বিষয়ে চিকিৎসকের শংসাপত্রও আছে ওই শিক্ষিকার কাছে। অধ্যক্ষা কোন যুক্তিতে সেই শংসাপত্র অস্বীকার করছেন, প্রশ্ন তাঁর। শবরীদেবী বলেন, “ওই স্কুলে ১৬ বছর শিক্ষকতা করেছি। কিন্তু অধ্যক্ষা এখন আমাকে শিক্ষাকর্মী হিসেবে কাজে যোগ দিতে বলছেন। ১৬ বছরে আমার যা পাওনা, তা বুঝে নিয়ে গোড়া থেকে শুরু করতে হবে বলেও জানান অধ্যক্ষা।” এতে আপত্তি তুলেছেন ওই শিক্ষিকা। চাকরি ফেরত চেয়ে স্কুল-কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার দরবার করেন তিনি। ব্যর্থ হয়ে দ্বারস্থ হন মহিলা কমিশনের।

এ দিন মহিলা কমিশনের ডাকে সেখানে যান শবরীদেবী। আগে কয়েক বার তলব উপেক্ষা করলেও অধ্যক্ষা ঝুমুরদেবী এ দিন কমিশনে হাজির হন। কমিশনের দুই প্রবীণ সদস্যা কথা বলেন ঝুমুরদেবীর সঙ্গে। পরে কমিশনের অন্যতম সদস্যা শিখা আদিত্য বলেন, “মানবিকতার কারণেই ওই শিক্ষিকার চাকরি ফিরিয়ে দিতে অধ্যক্ষার কাছে আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু অধ্যক্ষার অভিযোগ, শিক্ষিকা ঠিকঠাক পদ্ধতি মেনে ছুটি নেননি। তাই স্কুল পরিচালন সমিতি শবরীদেবীকে আর শিক্ষিকার পদে ফিরিয়ে নিতে রাজি নন। এতে তাঁর কিছু করার নেই বলেও জানিয়ে দেন অধ্যক্ষা।” কমিশনকে অধ্যক্ষা জানান, শবরীদেবী প্রথমে তাঁদের প্রস্তাবে রাজি হয়ে দিন দুয়েক শিক্ষাকর্মী হিসেবে কাজ করেন। তার পরেই হঠাৎ তিনি বেঁকে বসেন এবং মহিলা কমিশন ও আইনজীবীর দ্বারস্থ হন। শবরীদেবী অবশ্য এ কথা অস্বীকার করেছেন। ওই শিক্ষিকা জানান, তিনি অধ্যক্ষাকে চিঠি লিখে এবং ই-মেল করে ছুটি নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন। তা হলে নিয়ম না-মেনে ছুটি নেওয়ার অভিযোগ কী করে উঠছে, তাঁর বোধগম্য হচ্ছে না।

সূত্র : নিজস্ব সংবাদদাতা, আনন্দবাজার পত্রিকা, ১১ মার্চ , ২০১৫

সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/25/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate