অযত্ন আর অবহেলায় বেড়ে ওঠা একটি ফলের নাম ডুমুর। ঝোপঝাড়ে যার দেখা প্রায়ই মেলে। ডুমুরের আধিপত্য মূলত তরকারিতে। এই ফলে আছে অজানা অনেক পুষ্টিগুণ। আসুন জেনে নিই ডুমুর খেলে আরও কী উপকার পাওয়া যায়।
অনেক সময় দেহে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এ সময় হাত পায়ের গিঁটে ব্যথা, হাড় ক্ষয়ে যাওয়া, দাঁত ভঙ্গুর ইত্যাদি হয়। এই ধরণের সমস্যা থেকে নিজেকে বাঁচাতে এবং প্রতিরোধ গড়ে তুলতে প্রয়োজন ক্যালসিয়ামের। কারণ ক্যালসিয়ামে রয়েছে হাড় মজবুত এবং ক্ষয়রোধ করার দারুণ কার্যকর ক্ষমতা। আর প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়ামের নির্ভরযোগ্য একটি উৎসের নাম চির পরিচিত ডুমুর।
ডুমুর ও ডুমুরের পাতায় এমন একটি উপাদান আছে যা মানব দেহের ট্রাইগ্লিসারাইড লেভেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এই লেভেল নিয়ন্ত্রণে থাকলে হার্ট সুস্থ থাকে। এ ছাড়া ডুমুরে রয়েছে যথেষ্ট পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ। তাই খাদ্য তালিকায় ডুমুর রাখা জরুরি।
এক গবেষণায় দেখা গেছে, খাদ্য আঁশসমৃদ্ধ ডুমুর নিয়মিত খাওয়ার ফলে ৩৪% নারীর মধ্যে স্তন ক্যানসার হওয়ার সম্ভাবনা কমে গেছে। যে সব নারীর মেনোপজ হয়ে গেছে অর্থাৎ মাসিক স্থায়ী ভাবে বন্ধ হয়ে গেছে তাদের পরবর্তী সময়ে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হতে পারে। এতে স্তন ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায় অনেক বেশি। নিয়মিত ডুমুর খেলে এ সম্ভাবনাকে ৫০% পর্যন্ত কমিয়ে আনা সম্ভব বলে দাবি ওই গবেষকদের।
পটাশিয়াম উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। নিয়মিত পটাশিয়ামের জোগান দিতে ডুমুরের জুড়ি নেই। ফল হিসেবে খাবার অভ্যাস না থাকলেও মাঝে মাঝে সবজি হিসেবে রাখতে পারেন খাবার তালিকায়। তা ছাড়া বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যায় পড়েন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়ায় দুষ্কর। নিজেকে তাদের তালিকার বাইরে রাখতে এখনই নিতে পারেন ব্যবস্থা।
ডুমুরে উপস্থিত পেকটিন রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। যাঁরা নিজের ওজন নিয়ে সংশয়ে ভোগেন তাঁরা নিয়মিত ডুমুর খেতে পারেন।
ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রণে রাখতে রোগীকে ইনসুলিন ইনজেকশন নিতে হয়। গবেষণায় জানা গেছে, ডুমুরের পাতায় আছে অ্যান্টি-ডায়াবেটিক উপাদান। যা রোগীকে ইনসুলিন গ্রহণের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে। ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ডুমুরের পাতার রস খেতে পারেন। ইনসুলিনের ওপর নির্ভরশীল ডায়াবেটিক রোগীর জন্য ডুমুর খুবই উপকারী।
পেটের সমস্যা দূর করতে ডুমুর খুব ভালো কাজ করে। কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলস প্রতিরোধে সহায়ক হিসেবে কাজ করে ডুমুর। এ ছাড়াও দুর্বলতায় ভোগেন এ রকম ব্যক্তির জন্য ডুমুর উপকারী। পিত্ত ঠান্ডা করতেও বেশ উপযোগী।
এ ছাড়াও ডুমুরের নানাবিধ ব্যবহার প্রচলিত আছে। কাঁটা ছেড়া বা পোকামাকড়ের কামড়ে জ্বালা পোড়া রোধে ডুমুরের রস ব্যবহার করলে উপশম হবে। ব্রন সারাতেও দারুন কার্যকর।
তথ্যসূত্র : বাংলামেল ২৪ ডট কম, স্বাস্থ্য বার্তা এবং অন্যান্য সূত্র থেকে সংগৃহীত
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019