বচত ল্যাম্প যোজনায় গুণগত মানসম্পন্ন এবং বিদ্যুতের দক্ষ ব্যবহার-উপযোগী সিএফএল বালব প্রদান করা হয়। একটি সাধারণ বালবের দামের সমান দামে সিএফএল বালব দেওয়া হয় অর্থাৎ ১৫ টাকা বালব পিছু। প্রতি সিএফএল বালবের দাম কমপক্ষে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। যে কারণে সাধারণ বাড়িতে এর প্রয়োগ তেমন এগোয়নি। সরকারের লক্ষ্য প্রায় ৪০ কোটি সাধারণ ল্যাম্প পরিবর্তন করে সিএফএল ল্যাম্প চালু করা। এর ফলে ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ সাশ্রয় হবে। শুধু তা-ই নয়, এর ফলে প্রতি বছর ২৪০ লক্ষ টন কম কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন হবে। ক্লিন ডেভলপমেন্ট ব্যবস্থার মাধ্যমে দামের তফাৎকে কার্বন ক্রেডিটে পরিণত করে আন্তজার্তিক বাজারে তা বিক্রি করা যেতে পারে। ইউএনএফসিসি-র কিয়োটো প্রোটোকল অনুযায়ী তা সম্ভব।
সিএফএল বাল্ব ব্যবহারের ক্ষেত্রে সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও রয়েছে। এই বাল্ব আদৌ অর্থকরী কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। বাল্বটি কিনতে এককালীন যে টাকা দিতে হয় তা সাধারণ বাল্ব বা টিউবের চেয়ে বেশি। এক বছরের গ্যারান্টি থাকলেও তা খুব বেশিদিন চলে না। ফলে আবারও নতুন টিউব বা বাল্ব কিনে লাগাতে হয়। সে ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ খরচের জন্য প্রদত্ত খরচ অনেকটা কমানো গেলেও বাল্বের দাম অত্যধিক বেশি হওয়ায় এবং তা খুব বেশিদিন না চলায় হরে দরে খরচ একই থেকে যায় বা কয়েকটি ক্ষেত্রে বাড়ে। সরকারি ক্ষেত্রে বিদ্যুতের খরচ আর বিদ্যুৎ সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি কেনা সংক্রান্ত খরচ আলাদা হেডে দেখানোর রীতি প্রচলিত রয়েছে। ফলে একটি হেডে খরচ কম দেখানো সম্ভব হয়। কিন্তু অন্য হেডে যে খরচ বাড়ে সে কথা তেমন বলার উপায় থাকে না। গৃহস্থের ক্ষেত্রে কিন্তু খরচটা প্রায়ই উপলব্ধি করা যায়। এই কারণে বচত ল্যাম্প যাতে সত্যিই খরচ কমাতে সমর্থ হয় বা তার উপযোগী হয়ে ওঠে তাহলে এর গুণমানকে অনেক উন্নত করতে হবে। অর্থাৎ সিএফএল ল্যাম্পকে অনেকটাই কার্যকরী করে তুলতে হবে। এর জন্য গবেষণার প্রয়োজন। এখন অবশ্য বিজ্ঞানীরা সিএফএলের চেয়ে এলইডি ল্যাম্পকে অনেক বেশি সাশ্রয়কারী বলে মনে করছেন। এই কারিগরীতে বানানো ল্যাম্পগুলি সহজে খারাপ হয় না। কিন্তু সিএফএল ল্যাম্পের ব্যবহারও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে। নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয় যে সিএফএল বাল্ব এলইডির চেয়ে অর্থকরী হবে। তবে এই দুই প্রযুক্তিই যে আগামীদিনে বিদ্যুতের যন্ত্রাংশের বাজার দখল করতে চলেছে তা নিয়ে কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই। কয়েকটি রাজ্যে সরকারি দপ্তরে ইতিমধ্যেই এলইডি ল্যাম্প লাগানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গেও সরকারি দপ্তরগুলিতে এই ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্র লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। খুব শীঘ্রই তা ব্যাপক আকার ধারণ করবে বলে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার দাবি।
সূত্র: Ministry of Power
সর্বশেষ সংশোধন করা : 12/14/2019