নীতিগত হস্তক্ষেপের ফলে শক্তির লভ্যতার ব্যাপারে পরিবর্তন মহিলা ও পুরুষদের ক্ষেত্রে ভিন্ন ধরনের প্রভাব ফেলে। সুতরাং এনার্জি পলিসি বা শক্তিনীতি স্থির করার সময় লিঙ্গ দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়টি খেয়াল রাখা দরকার। নীচের বিষয়গুলি ভারতে লিঙ্গ-সংবেদনশীল শক্তি সংস্কারের কিছু নমুনা তুলে ধরছে।
‘দৃষ্টিভঙ্গি ২০১৫’ অনুযায়ী সরকার এই সময়ের মধ্যে দেশে এলপিজির ব্যবহার ৫০ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশে তুলে আনার কথা ঘোষণা করেছে। এর মধ্যে অতি অবশ্যই গ্রামীণ এলাকা পড়ে। দৃষ্টিভঙ্গি-নথির লক্ষ্য হল গ্রামীণ ও এখনও পরিষেবা পৌঁছয়নি এমন এলাকায় এলপিজি সরবরাহ বাড়িয়ে জীবনযাত্রার মানের উন্নতি ঘটানো। ২০১৩-র অক্টোবর থেকে দিল্লিকে প্রথম কেরোসিনমুক্ত রাজ্য হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।
যে সব জায়গায় মাসে ৬০০টির মতো এলপিজি রিফিল বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে সেই সব প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকা এবং দুর্গম ও কম সম্ভাবনাময় এলাকায় ছোট ছোট এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটার এজেন্সি তৈরি করে এলপিজির ব্যবহারকে বাড়ানো এই প্রকল্পের লক্ষ্য। এই প্রকল্পে ডিস্ট্রিবিউটার স্বামী ও স্ত্রী যৌথ ভাবে হবেন। যদি পুরুষ একাই আবেদন করেন তা হলে তাঁকে লিখিতভাবে জানাতে হবে বিবাহের পর স্ত্রী আপনা হতেই মালিকানার অংশীদার হবেন। এর সাহায্যে গ্রামীণ এলাকায় মহিলাদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে আরও এক ধাপ এগোনো যাবে।
স্বাস্থ্য, আবহাওয়া পরিবর্তন এবং শক্তি সুরক্ষার দিকে নজর রেখে ভারত সরকারের নতুন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রক ২০০৯-১০ সালে একটি বিশেষ কুকস্টোভ প্রকল্প গ্রহণ করেছে। সমাজের সবচেয়ে দুর্বল ও ভঙ্গুর শ্রেণির মানুষের স্বাস্থ্য ও কল্যাণ বিষয়ক সমস্যার দিকে নজর দিতে পারছে জৈবভর কুকস্টোভ। এই প্রযুক্তি পরিচ্ছন্ন। ফলে এর ব্যবহারে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমনও কমানো যায়।
পরিবারের রান্নার উপযোগী পরিবহণযোগ্য ১৫ হাজার জৈবভর কুকস্টোভের কাজ দেখানোর একটি পাইলট প্রজেক্ট নেওয়া হয়েছিল ২০১১-১২ সালে। ৯ হাজার কুকস্টোভ বিতরণ করা হয়। বিভিন্ন রাজ্যে তিনটি রূপায়ণকারী এজেন্সির মাধ্যমে প্রকল্পটি চালু করা হয়। জৈবভর দামের পঞ্চাশ শতাংশ ভর্তুকি হিসাবে প্রদান করা হয় (সাধারণ ড্রাফট কুকস্টোভের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা, ফোর্সড ড্রাফট কুকস্টোভের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৭০০ টাকা)। তা ছাড়া কারিগরি সহায়তা ও অন্যান্য পরিষেবার জন্য এজেন্সিগুলিকে কুকস্টোভ প্রতি ১৫ শতাংশ টাকা প্রদান করা হয়। অভিজ্ঞ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা, স্বনির্ভর গোষ্ঠী, তৃণমূল স্তরে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি প্রকল্প রূপায়ণের অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন উৎপাদনকারী সংস্থার মাধ্যমে প্রকল্পটি রূপায়িত করা হয়।
জওহরলাল নেহরু জাতীয় সৌর মিশনের ‘অফ-গ্রিড অ্যান্ড ডিসেন্ট্রালাইজড সোলার অ্যাপ্লিকেশনস স্কিম’-এর অধীনে কেন্দ্রীয় নতুন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রক সৌর কুকারের জন্য আর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে। সরাসরি তাপ প্রদানকারী যন্ত্রের ক্ষেত্রে প্রতি বর্গমিটার সংগ্রাহক এলাকার জন্য ৩৬০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয় ব্যবহারকারীকে। প্রতি বর্গমিটার ‘ম্যানুয়াল ট্র্যাকিং’ যুক্ত কনসেনট্রেটরের জন্য ব্যবহারকারীকে ২১০০ টাকা করে দেওয়া হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020