১৯৭১ সালে হৃষীকেশ মুখার্জি পরিচালিত ‘আনন্দ’ ছবিতে রাজেশ খান্না আর অমিতাভ বচ্চন পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেন। ভারতবাসী তখনই বুঝে নিয়েছিল বলিউড আশীর্বাদপুষ্ট হতে যাচ্ছে দুই মহান শিল্পীর আবির্ভাবে। সত্তর দশকে ভারতীয় ছবির সুপারস্টার হচ্ছেন রাজেশ খান্না। অমিতাভের আগেই তিনি তখন তারকাখ্যাতি লাভ করেছেন। তখন রোমান্টিক হিন্দি সিনেমার অপর নামই ছিল রাজেশ খান্না। আরাধনা, রোটি, সাচ্চা ঝুটা, অমর প্রেম, দাগ, হাতি মেরে সাথি-র মতো একের পর এক হিট ছবি বলিউডকে খুব কম তারকাই দিতে পেরেছেন।
সত্তর দশকটা রাজেশ খান্নার হলেও সত্তর দশকের মাঝামাঝি আর ১৯৮০-৯০ টানা প্রায় দুই দশক নিজের করে নিয়েছেন বলিউডের জীবন্ত কিংবদন্তি অমিতাভ বচ্চন। ১৯৭৫ সালে মুক্তি পায় রমেশ সিপ্পি পরিচালিত ইতিহাস সৃষ্টিকারী চলচ্চিত্র ‘শোলে’। প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা শেখর কাপুর এই ছবিটির গুরুত্ব ও মাহাত্ম্য বোঝাতে মন্তব্য করেন, ‘ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। শোলের আগে এবং পরে।’ ছবিটিতে অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, হেমা মালিনী, জয়া বচ্চন, সঞ্জীব কাপুর ও আমজাদ খান অভিনয় করেন। আমজাদ খান অভিনীত এই ছবির ডাকাত সর্দার গব্বর সিং চরিত্রটি ভারতীয় চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম সেরা খলচরিত্র। ছবিটির কিছু কিছু সংলাপ আজও মানুষের মুখে মুখে ফেরে।
ভারতের কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা যশ চোপড়ার সঙ্গে জুটি বেঁধে অসংখ্য হিট ছবি উপহার দেন বলিউড শাহেনশাহ মিস্টার বিগ বি। অমিতাভ বচ্চন অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো হচ্ছে দিওয়ার, জঞ্জির, ডন, লাওয়ারিশ, অগ্নিপথ, কভি কভি, সিলসিলা ইত্যাদি। রাজ কাপুর-নার্গিস-এর পর অমিতাভ-রেখা জুটি বলিউডের সব চেয়ে আলোচিত জুটি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। এই জুটির উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো হচ্ছে দো আনজানে (১৯৭৬), মুকাদ্দর কা সিকান্দর (১৯৭৮), সুহাগ (১৯৭৯), মি. নটবরলাল (১৯৭৯), সিলসিলা (১৯৮১)। শূন্য দশকে এই মহাতারকা প্রায় হারিয়ে যেতে বসলেও ফিনিক্স পাখির মতো বলিউডে দোর্দন্ড প্রতাপে প্রত্যাবর্তন করেন। সত্তর-আশি দশকে হেমা মালিনী, পরভিন ববি, জিনাত আমন বলিউডের গ্ল্যামারাস গার্ল হিসেবে আবির্ভূত হন। এই সময়টিতে বলিউডের চলচ্চিত্র নির্মাতাদের মধ্যে সামাজিক অ্যাকশনধর্মী ছবির নির্মাণের ঝোঁক ওঠে।
সূত্র : নাট্যচিন্তা, শতোত্তরবর্ষে বাংলা চলচ্চিত্র, নভেম্বর ২০১৩-এপ্রিল ২০১৪ সংখ্যা থেকে সংকলিত
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020