ভারতীয় চলচ্চিত্র ষাটের দশক থেকেই বিভিন্ন আঞ্চলিক পর্যায়ে পৌঁছতে শুরু করে এবং ভোজপুরি, উত্তর ও দক্ষিণের বিভিন্ন চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু হয়। দক্ষিণ ভারত এ দিক থেকে একটু বেশি এগিয়ে থাকবে। বলিউডের অনেক রথী-মহারথী মূলত দক্ষিণ ভারতের সম্পদ। তামিল, তেলুগু, মালায়ালাম থেকে শুরু করে সমগ্র দক্ষিণ ভারত কোনও কোনও দিক থেকে বলিউডের চেয়েও শক্তিশালী। জন্ম দিয়েছে কমল হাসন, রজনীকান্ত, রেখা, শ্রীদেবী, হেমা মালিনী, ওয়াহিদা রহমান, বিদ্যা বালানদের মতো তারকাদের। রজনীকান্ত হচ্ছেন এশিয়ার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেতা। বর্তমানে তামিল-তেলুগু ছবির পুন:নির্মাণের একটি ধারা চালু হয়েছে বলিউডে। তবে দক্ষিণ ভারত, বিশেষত তামিলনাডু ও অন্ধ্রপ্রদেশের সিনেমা নিয়ে কিছু বলতে কয়েকটি বিষয় আলোচনা না করলেই নয়। তামিলনাডুর দ্রাবিড় রাজনীতির সঙ্গে চলচ্চিত্র বরাবরই নিবিড় সম্পর্কে বাঁধা। দ্রাবিড় রাজনীতির সূচনাবিন্দু থেকেই প্রচারের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে সিনেমাকে। ১৯৫২ সালে পরাশক্তি ফিল্মের মধ্য দিয়ে প্রথম সিনেমার দুনিয়ায় প্রবেশ করে দ্রাবিড় রাজনীতি। ১৯৬৯ সালে তামিলনাড়ু রাজ্য গঠিত হওয়ার পর থেকে যে ৬ জন মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন তাঁদের মধ্যে ৫ জনই অভিনেতা বা চিত্রনাট্য নির্মাতা।
তামিলনাডুর প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও নায়ক এমজিআর পরিচিত ছিলেন পুরতচি থলাইভার বা বিপ্লবী নেতা হিসেবে। তামিলনাডুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতা পরিচিত পুরতচি থলাইভি বা বিপ্লবী নেত্রী হিসেবে। তামিলনাডুর পাঁচ বারের মুখ্যমন্ত্রী এম করুণানিধি পরিচিত কালাইগনার বা শিল্পী হিসাবে। করুণানিধি এবং এমজিআর দু’ জনেই ফিল্ম জীবনের শুরু থেকেই দ্রাবিড় আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
ডিএমকে দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এএস রাজেন্দ্রন ১৯৬২ সালে নির্বাচনে জিতে মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সির বিধায়ক হন। রাজেন্দ্রন ভারতের প্রথম চিত্রতারকা জনপ্রতিনিধি।
অন্য দিকে অন্ধ্রপ্রদেশের কিংবদন্তী চিত্রতারকা এনটি রাম রাও ১৯৮২ সালে তেলুগু দেশম পার্টি গঠন করার ১০ মাসের মধ্যে ক্ষমতায় আসেন। অন্ধ্রের সুপারস্টার চিরঞ্জীবী ২০০৮ সালে প্রজারাজ্যম পার্টি তৈরি করেন, ২০০৯ সালের ভোটে ১৮ শতাংশ ভোট পান। এনটিআর, চিরঞ্জীবী ছাড়া বিজয়া শান্তি, মোহন বাবুর মতো তারকারাও অন্ধ্রের রাজনীতিতে এসেছেন।
সূত্র : নাট্যচিন্তা, শতোত্তরবর্ষে বাংলা চলচ্চিত্র, নভেম্বর ২০১৩-এপ্রিল ২০১৪ সংখ্যা থেকে সংকলিত
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/28/2020