কার্শিয়াং দার্জিলিং জেলার একটি শৈল শহর এবং মহকুমা। এটি ১৪৫৮ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। কার্শিয়াং দার্জিলিং থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে। এখানকার আবহাওয়া সারা বছরই আরামদায়ক, শীতকালের ঠান্ডা দার্জিলিঙের মতো তীব্র নয়। কার্শিয়াং -এর স্থানীয় নাম খার্সাং, লেপচা ভাষায় এই কথার অর্থ ‘সাদা অর্কিডের দেশ’। কার্শিয়াং শিলিগুড়ি থেকে ৪৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং এটি শিলিগুড়ির সঙ্গে সড়ক পথ ও হিমালয়ান রেলওয়ে দ্বারা যুক্ত। নিকটতম বিমানবন্দর বাগডোগরা। নিকটতম রেল স্টেশন নিউ জলপাইগুড়ি, এটি কার্শিয়াং থেকে ৫৩ কিলোমিটার দূরে। শহরের অর্থনীতির ভিত্তি স্কুল ও পর্যটন। কার্শিয়াং বেড়ানোর সেরা সময় মার্চ থেকে মে মাস এবং আগস্টের শেষ থেকে অক্টোবর। ব্রিটিশরা সিকিমের সম্রাটের থেকে ১৮৩৫ সালে কার্শিয়াং দখল করে নেয়। পরবর্তী কালে ১৮৮০ সাল থেকে এটি ব্রিটিশ শাসকদের বেড়ানোর জায়গায় পরিণত হয় এবং অসুস্থদের স্বাস্থ্য ফেরানোর জায়গা হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করে। কার্শিয়াং –এর উচ্চতম স্থান ডাউহিল – কয়েকটা দিন বিশ্রামের পক্ষে অতি মনোরম স্থান।
দার্জিলিঙের ৫০ কিলোমিটার পূর্বে কালিম্পং একটি ছোট্ট শান্ত শহর। এটি ১২০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। একসময় এই শহর দিয়েই ভারত-তিব্বতের মধ্যে বাণিজ্য চলত। কালিম্পং শব্দের মধ্যেই এর ইতিহাস লুকিয়ে আছে। এই শহরে এক সময় ভূটানের রাজ্যপালের কেন্দ্রীয় দফতর ছিল। ‘কালিম’ শব্দের অর্থ ‘রাজার মন্ত্রী’ এবং ‘পং’ শব্দের অর্থ ‘ক্ষমতার কেন্দ্র’। শৈবালদামের ওপর পা ফেলে সোনালি ওক গাছের ঘন অরণ্যের মধ্য দিয়ে হেঁটে যাওয়া কালিম্পং-এর অন্যতম আকর্ষণ। প্রকৃতির সান্নিধ্য উপভোগ করতেই পর্যটকরা কালিম্পং-এ যান।
কালিম্পং-এর চমৎকার আবহাওয়া এবং এর কাছাকাছি অঞ্চলে আরও বেশ কিছু পর্যটন কেন্দ্র থাকায় ভ্রমণপিপাসু মানুষের অন্যতম ঠিকানা হয়ে উঠেছে এই শহর। কালিম্পং-এর ফুল চাষ উল্লেখযোগ্য। নান ধরনের অর্কিডের জন্য এর ফুলের বাজারও বাণিজ্যিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ। শহরের অর্থনীতিতে নার্সারিগুলির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। এই শহর বৌদ্ধ ধর্মের অন্যতম কেন্দ্র। ঝাং ঢক পালরি ফোডাং নামে বিখ্যাত বৌদ্ধ মন্দিরটি অন্যতম দর্শনীয় বস্তু। কালিম্পং থেকে মাত্র ৬ কিমি দূরে ডেলো পাহাড়ের শীর্ষ থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা রূপটি ভারী সুন্দর।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 8/30/2019