অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

অ্যানথ্রোপোলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া

অ্যানথ্রোপোলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া

অ্যানথ্রোপোলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া ১৯৪৫ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারত সরকার কর্তৃক বেনারসে প্রতিষ্ঠিত একটি কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান। অ্যানথ্রোপোলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া ছিল সার্ভে অব ইন্ডিয়া,আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া, জিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া এবং বোটানিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়াসহ এ ধরনের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের অনুরূপ। পরবর্তীকালে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় এর স্থানীয় দফতর প্রতিষ্ঠা করা হয়। অস্থায়িভাবে স্থাপিত বা আঞ্চলিক দফতর স্থাপনের মানদন্ড ছিল স্থানীয় পরিস্থিতির বিশেষ বৈশিষ্ট্য যা রাজনৈতিক ও সামাজিক উভয়ভাবেই পরিবর্তনপ্রবণ এবং এ বিচারেই পোর্ট ব্লেয়ারে (আন্দামান ও নিকোবর) প্রথম এবং শিলং-এ (উত্তর-পূর্ব) বর্তমানে দেরাদুন (উত্তর), উদয়পুর (পশ্চিম), কলকাতা (পূর্ব), শিলং (উত্তর-পূর্ব), নাগপুর (মধ্য), মহীশূর (দক্ষিণ) এবং পোর্ট ব্লেয়ারে (আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ)-এর আঞ্চলিক দফতর রয়েছে। এ ছাড়া একটি উপ-আঞ্চলিক দফতর রয়েছে জগদলপুরে (বাস্তার, মধ্যপ্রদেশ) এবং দুটি অস্থায়ী দফতর রয়েছে সাগর (মধ্যপ্রদেশ) এবং রাঁচিতে (বিহার)। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের এধরনের প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে বৃহত্তম এবং একটি সুখ্যাত প্রতিষ্ঠানরূপে মর্যাদা লাভ করেছে। খসড়া প্রস্তাবে প্রদত্ত রূপরেখায় সুচিন্তিত পরিবর্তন এনে ও নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করে এর মূল বৈশিষ্ট্যগুলি বজায় রাখা হয়েছে। এ ইনস্টিটিউটের ভিত্তি নিম্নলিখিত সূত্রগুলির ওপর নির্ভরশীল:

নৃতত্ত্বে প্রাগ্রসর গবেষণা, গবেষণার ফলাফল প্রচার এবং ভারতে বসবাসকারী সম্প্রদায়গুলি সম্পর্কে জ্ঞানভান্ডার গড়ে তোলার একটি বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠান। দেশিয় জনগোষ্ঠী এবং গ্রাম ও শহরাঞ্চলে বসবাসকারী বিভিন্ন ধর্মীয় শ্রেণির সমাজ সম্পর্কে গবেষণায় এটি একান্তভাবে নিয়োজিত থাকবে।

জ্ঞানের শাখা হিসেবে নৃতত্ত্বের প্রকৃতি হবে সামগ্রিক এবং মানুষের সকল দিক গবেষণা করা হবে। প্রাক্ ইতিহাসের প্রাকৃতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দিকগুলিও গবেষণার অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এ দৃষ্টিভঙ্গি বিশ্বের অন্যান্য অংশে নৃতত্ত্বের ধারণা থেকে ভিন্ন। বিশেষ করে পাশ্চাত্যে উপরিউক্ত উপাদানগুলির প্রত্যেকটিকে স্বয়ংসম্পূর্ণ বিভাগ রূপে গণ্য করা হয়।

এ প্রতিষ্ঠান ভারত সরকারের প্রশাসনিক শাখাগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে যাতে জাতিগঠনের জন্য বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সমতা বিধান এবং জনগণের বিশেষ প্রয়োজন উপলব্ধি করে গবেষণালব্ধ জ্ঞান কল্যাণমুখী ও অন্যান্য কাজে লাগানো যায়।

প্রতিটি আঞ্চলিক দফতরের ‘আঞ্চলিক নৃতাত্ত্বিক জাদুঘর’ রূপে একটি জাদুঘর থাকবে যেখানে মাঠ পর্যায়ে অনুসন্ধানে বস্ত্তগত সংস্কৃতির সংগৃহীত সামগ্রী সংরক্ষণ করা হবে এবং তা বহুসংখ্যক মানুষের সামনে প্রদর্শন করা হবে যাতে বিভিন্ন ধরনের হাতে-তৈরি শিল্পকর্ম সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি হয়। জাদুঘরগুলি আঞ্চলিক সংস্কৃতির তত্ত্বাবধায়ক রূপেও কাজ করবে। অ্যানথ্রোপোলজিক্যাল সোসাইটি অব ইন্ডিয়ার কলকাতাস্থ সদর দফতরেও একটি কেন্দ্রীয় জাদুঘর রয়েছে। সদর দফতরে এবং সকল আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক দফতরগুলিতে শুধু প্রতিষ্ঠানের সদস্যদের জন্য নয়, বিভিন্ন ক্ষেত্রের উৎসাহী পন্ডিতদের জন্যও গবেষণার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে সহায়ক বিভিন্ন বিষয়ের একটি পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থাগার গড়ে তোলা হবে।

এ প্রতিষ্ঠানের কর্মীবৃন্দকে নৃতত্ত্বের সকল শাখা প্রাক্-ইতিহাস, (প্রাকৃতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক), ভাষাবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, বাস্তব্যবিদ্যা (ভূগোল, মানচিত্রাঙ্কন বিদ্যা), পরিসংখ্যান, শিল্পকলার বিভিন্ন রীতি (চারুকলা, চলচ্চিত্র বিজ্ঞান), গ্রন্থাগার বিজ্ঞান এবং অতি সাম্প্রতিক কম্পিউটার বিজ্ঞান থেকে নেওয়া হবে। জ্ঞানের শেষোক্ত তিনটি বিষয়ের উদ্দেশ্য হবে মানুষের সামগ্রিক বোঝাপড়া।

সার্ভে শুরু হওয়ার পর ১৯৪৬-৪৭ সালের বেশিরভাগ সময় ব্যয় হয়েছিল অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা, বিশেষত গ্রন্থাগার ও গবেষণাগার নির্মাণে। ১৯৪৫ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে ভারতের স্বাধীনতা লাভ করা পর্যন্ত এ সার্ভে হরপ্পায় খননকার্যের ফলে প্রাপ্ত কঙ্কালজাতীয় উপাদানের পুনরুদ্ধার ও অস্থি সম্পর্কে (Osteometric) গবেষণার জন্য বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করে। উড়িষ্যার লানঝিয়া সাওরাদের (Lanjhia Saoras) ওপর (শারীরিক বৈশিষ্ট্য ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে গবেষণার জন্য) বহুমুখী বৈজ্ঞানিক জরিপ চালানো হয় এবং উত্তর প্রদেশের জৌনসার-বাওয়ারদের ওপরও অনুরূপ জরিপ পরিচালিত হয়। উপজাতি শিশুদের নিয়ে গবেষণালব্ধ একই রকম তথ্যাদির সঙ্গে তুলনার জন্য বেনারসের স্কুল ছাত্রদের মধ্যে চালানো হয় একটি মানসিক পরীক্ষা। জাপানি দখলদারিত্বের পর উপজাতিগুলির অবস্থা নির্ণয় প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ায় এবং দ্রুত-অপসৃয়মাণ এসব উপজাতিকে রক্ষা করার পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আন্দামান ও নিকোবরের টিকে থাকা উপজাতিগুলি সম্পর্কে জরিপ চালানো হয়। প্রাগ্রসর প্রশিক্ষণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে জৈব নৃতত্ত্বে গবেষণাগারে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু স্নাতকোত্তর ছাত্রকে ১৯৪৬-৪৭ সালে নির্বাচিত করা হয় এবং জরিপ প্রকল্পের কাজ চলছে এমন এলাকাগুলিতে তাদের নিযুক্ত করা হয়।

এ প্রতিষ্ঠান সারগ্রাহী ঐতিহ্য (eclectic tradition) ও উত্থানশীল বিষয়, গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন, জাতীয় বিপর্যয়সমূহ নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ করে এবং গবেষণায় বিশেষ গোষ্ঠীর জীবনযাপন রীতির ওপর গুরুত্ব দেয়। কাঠামোগত কারণে প্রতিষ্ঠানটির সকল জাতি সম্পর্কে গবেষণা প্রকল্প পরিচালনার সুবিধা রয়েছে। নগর নৃতত্ত্ব (urban anthropology) গবেষণা যুক্ত হয়। এর ফলে উপজাতীয় জনগোষ্ঠী সম্পর্কিত গবেষণায় প্রথম দিককার গুরুত্ব অক্ষুণ্ণ রেখে ভারতের ভেতরের ও বাইরের পন্ডিত বা ইনস্টিটিউটের সহযোগিতায় প্রকল্প পরিচালনার জন্য এ প্রতিষ্ঠান ছিল উন্মুক্ত। অ্যানথ্রোপোলজিক্যাল সোসাইটি অব ইন্ডিয়ার একটি ক্ষুদ্র প্রকাশনা ইউনিট রয়েছে। এটি শিক্ষায়তনে ব্যবহারের জন্য গবেষণার ফলাফল এবং এর নিজস্ব সাময়িকী দ্য জার্নাল অব দি অ্যানথ্রোপোলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া (The Journal of the Anthropological Survey of India) প্রকাশ করে থাকে। এ সাময়িকীটিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পন্ডিতগণ লিখে থাকেন। আবাসিক প্রশিক্ষণের জন্য নিয়মিত কর্মশিবির, বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট পন্ডিতদের বক্তৃতামালা, সেমিনার, তালিকা উপস্থাপন, প্রতিষ্ঠানের কর্মচারিবৃন্দ কর্তৃক একক বা দলগতভাবে পরিচালিত প্রকল্পের অগ্রগতি ও চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেশ, অন্যান্য বিদ্যায়তনিক/গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা এবং বর্তমানে মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দু জাদুঘরগুলিতে বিষয়ভিত্তিক প্রদর্শনীর মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও স্কুল-কলেজের ছাত্রদের মনোযোগ আকর্ষণ করাও এ প্রতিষ্ঠানের কমর্কান্ডের অন্তর্ভুক্ত।

সূত্র: বাংলাপিডিয়া

সর্বশেষ সংশোধন করা : 3/4/2024



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate