ইঞ্জিনিয়ারিং যাঁরা পড়তে আসেন, তাঁদের পড়াশোনার শেষে একটা চাকরি পাওয়ার লক্ষ্য থাকে। ফলে কেরিয়ার-কেন্দ্রিক শিক্ষা হিসেবে পড়াশোনার একটা পরিকল্পনা থাকা দরকার। এ কথা ঠিক যে বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় খুব ভালো প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই বিটেক ডিগ্রি দেওয়া হয়। তবে এমন অনেক কিছুই থেকে যায় যা পরবর্তীকালে চাকরির জন্য দরকারি অথচ সিলেবাসে নেই। চাকরিতে যাওয়ার আগে তেমনই কয়েকটা জিনিস শিখে নেওয়া ভালো। সেই জন্য কেউ যদি এই রকম ছোটখাটো কোর্স করে নিতে পারেন তা হলে ভালোই হয়। তবে ছাত্রছাত্রীদের একটা কথা মাথায় রাখতে হবে যে, তাঁদের মূল পড়াশোনাটা কিন্তু যেটা থাকার সেটাই থাকছে, শুধু অতিরিক্ত কিছু শিখে নেওয়াই ছোট কোর্সের উদ্দেশ্য। তৃতীয় বর্ষ থেকেই ছাত্রছাত্রীরা এই কোর্স শুরু করতে পারেন। প্রয়োজনে তার আগেও শুরু করে দিতে পারেন। তাঁদের খেয়াল রাখতে হবে, বিষয় সম্পর্কে যখন একটা প্রাথমিক ধারণা তৈরি হয়ে গিয়েছে, তখনই অন্য কোর্স শুরু করা ভালো। একটা কথা ছাত্রছাত্রীদের জেনে নেওয়া উচিত, কোনও সংস্থায় কাজ করার সময় তাঁদের অনেক কিছুই করতে হবে, যা বিটেক সিলেবাসে হয়তো ছিল না। ফলে সে ক্ষেত্রে তাঁদের আগ্রহ অনুসারে করা কোর্স কিন্তু কর্মক্ষেত্রে কাজের সুবিধা করে দেবে। কিন্তু একটা সন্দেহ ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রায়ই দেখা যায়, তাঁরা কোথায়, কোন সংস্থা থেকে এই কোর্স করবেন। এই সমস্যার বিষয়ে বিশেষ ভাবে সতর্ক থাকা জরুরি। প্রথমে ছাত্রছাত্রীদের দেখে নিতে হবে, তাঁরা যে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বা সংস্থায় পড়বেন বলে পরিকল্পনা করছেন, সেখানে কারা পড়াচ্ছেন। যে হেতু এই কর্ম-সংক্রান্ত বিষয়ের চাহিদা সব থেকে বেশি, তাই অনেকেই পড়াতে শুরু করেছেন এই বিষয়গুলো। তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশ সেই কাজে এতটাই অপটু যে, তাঁদের কাছে কোর্স করা মানে ছাত্রছাত্রীদের কয়েক মাসের সময় আর অর্থ অপচয়। তাই কোর্সে ভর্তি হওয়ার আগে সেই খেয়াল রাখতে হবে ছাত্রছাত্রীদেরই। আর একটা কাজ কয়েক দিন আগে থেকে হোমওয়ার্কের মতো করে নিতে হবে। কয়েক দিনে বিষয়টা পরিষ্কার হলেই বুঝে নিতে হবে ঠিক কোন অংশটা ছাত্রের পড়তে ভালো লাগছে। তার পর সেই অংশটাকে ভালো করে পড়তে হবে, আয়ত্তে আনতে হবে। বিষয়ের কোনও একটা দিক যদি আপনার দখলে থাকে, তা হলে সেই ব্যাপারটা নিয়েই আপনি কোর্স করুন, কর্মজীবনে সেটাই বেছে নিন। অনেকেই কোর্স নির্বাচনের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেন বাজারের চাহিদাকে। কিন্তু শুধুমাত্র বাজারে চাহিদা আছে বলেই কোনও কোর্স করা উচিত নয়, সে ক্ষেত্রে ভালো ফল পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় অনেক ক্ষেত্রেই।
সূত্র : হিরণ্ময় রায়, এই সময়, ২৬ মার্চ ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 9/28/2019