মাছের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে। দু’ বিঘা জলাশয়ের জন্য এই প্রকল্পে মৎস্যচাষি ১০ কেজি চারা পোনা, ৫০ কেজি মাছের খাদ্য, এবং ২৫ কেজি চুন বিনা খরচে পাবেন। জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণী বিকাশ স্থায়ী সমিতি ব্লকে মিনিকিটের ইউনিট সংখ্যা নির্ধারণ করে। জেলার সহ মৎস্য অধিকর্তা মিনিকিটের সামগ্রী সেন্ট্রাল ফিশারম্যান কোঅপারেটিভ সোসাইটির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ব্লকে মিনিকিট প্রাপকদের সরবরাহ করে থাকেন।
বেকার যুবক / মৎস্যজীবীকে স্বনিযুক্ত করার জন্য এই প্রকল্প অনুসারে সিটিং ফিশ ভেন্ডিং/ মোবাইল ফিশ ভেন্ডিং–এর (বসে মাছ বিক্রি বা ভ্রাম্যমান মাছ বিক্রি) ব্যবস্থা করা হয়েছে। সিটিং ফিশ ভেন্ডিং --- বসে মাছ বিক্রির জন্য প্রকল্পভোক্তাকে বিনা পয়সায় একটা দাঁড়ি পাল্লা, ইনসুলেটেড বক্স ও কিছু নগদ টাকা দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে চার হাজার টাকা প্রদান করা হয়। ভ্রাম্যমান মাছ বিক্রি --- ঘুরে ঘুরে মাছ বিক্রি করার জন্য একটা সাইকেল, দাঁড়িপাল্লা, ইনসুলেটেড বক্স ও কিছু নগদ টাকা দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে সাহায্যের পরিমাণ দশ হাজার টাকা। পঞ্চায়েত সমিতির সভায় প্রকল্পভোক্তার সংখ্যা ও তালিকা ঠিক করা হয়।
জলাশয়ের জল / মাটি পরীক্ষা এবং মৎস্য চাষিদের প্রশিক্ষণের জন্য ব্লকে ল্যাবরেটরি কাম ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করার ব্যবস্থা আছে। ব্লক স্তরে প্রশিক্ষণের মেয়াদ ৫ দিন। গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রশিক্ষণের মেয়াদ ৩ দিন। জেলা স্তরে ১০ দিন এবং রাজ্য স্তরে ১০ দিন।
গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে দৈনিক ১০০ টাকা, ব্লক স্তরে / জেলা স্তরে / রাজ্য স্তরে দৈনিক ১৫০ টাকা স্টাইপেন্ড দেওয়া হয়। এ ছাড়া প্রতি ক্ষেত্রে রাহা খরচ হিসাবে দৈনিক মাথাপিছু ১০০ টাকা দেওয়া হয়। প্রার্থী তালিকা পঞ্চায়েত সমিতি / জেলা পরিষদে ঠিক করা হয়।
জেলা স্তরে ২০ জন চাষিকে নিয়ে এক দিনের প্রশিক্ষণ।
ব্লক স্তরে ফার্মার অ্যাডভাইসারি কমিটি (ফ্যাক), ব্লক টেকনিক্যাল টিম (বিটিটি), মৎস্য আধিকারিক, কৃষি আধিকারিক, পশুপালন আধিকারিক, উদ্যান ও সমবায় আধিকারিক সবাইকে নিয়ে টেকনিক্যাল টিম গড়া হয়। এই টিম প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে।
বিঘা প্রতি ৪ হাজার টাকা খরচ করে ডেমনেস্ট্রশন সেন্টার-এ উন্নত প্রথায় মাছ চাষ করে অধিক ফলনে চাষিদের উৎসাহিত করা হয়। কোথায় ডেমনেস্ট্রশন সেন্টার হবে তা ঠিক করে পঞ্চায়েত সমিতি।
এই স্কুলে ৫০ জন চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এক জন অভিজ্ঞ মৎস্যচাষি প্রধান শিক্ষক পদে থাকেন। বিশেষজ্ঞরা প্রশিক্ষণ দেন।
বৈজ্ঞানিক প্রথায় মাছ চাষ করলে কী ভাবে অধিক ফলন হয় তা দেখানোর জন্য ৫০ জন চাষিকে নিয়ে সংশ্লিষ্ট খামারে সরকারি খরচে পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। চাষিদের উৎসাহ দেওয়ার জন্যই এই ব্যবস্থা।
৬০ বৎসর ঊর্ধ্বে মৎস্যচাষি / মৎস্যজীবীদের মাসিক এক হাজার টাকা মাথাপিছু বার্ধক্য ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা আছে। পঞ্চায়েত সমিতির সুপারিশক্রমে জেলা প্রশাসন তালিকা তৈরি করে।
জেলার সহ মৎস্য অধিকর্তা অন্তর্দেশীয় মৎস্য চাষিদের আইডেনটিটি কার্ড (পরিচয়পত্র) দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
রাজ্যে যে সব বিল / বাঁওড়, জলাশয় আছে সে সব জলাশয় একর প্রতি বাৎসরিক ২০ হাজার টাকা লিজ রেন্টে কমিটির মাধ্যমে লিজ দেওয়ার ব্যবস্থা আছে। কমিটিতে থাকেন ডিএলএলআরও/এসডিও/বিএলআরও/এফইও/বিডিও।
এই প্রকল্পে প্রাপক একটা রিকশা ভ্যান, দাঁড়িপাল্লা, ৩টি ইনসুলেটেড বক্স এবং মাছ কেনার জন্য নগদ ৪ হাজার টাকা এবং একটা মাইক সেট পান। সব মিলিয়ে মোট ৫০ হাজার টাকা পান। মাছের পুষ্টি সম্পর্কে মাইকে প্রচার করে জনসাধারণকে সচেতন করে মাছ কেনায় উৎসাহ দেওয়াই এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য।
সূত্র : রাজ্য মৎস্য দফতর
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/14/2020